Collection: লাউ বীজ

লাউ বা কদু শীতকালীন সবজিগুলোর মধ্যে অন্যতম। লাউ এক প্রকার লতানো উদ্ভিদ যা এর ফলের জন্যে চাষ করা হয়, যা কিনা কাঁচা অবস্থায় সবজি হিসেবে খাওয়া হয়, আর পরিপক্ব অবস্থায় শুকিয়ে এটি বোতল, পাত্র বা নল হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এ কারণেই লাউ এর ইংরেজি নাম হয়েছে Bottle gourd। কচি লাউয়ের রং হালকা সবুজ, ভেতরে সাদা রঙের শাঁস। লাউ পৃথিবীর অন্যতম পুরনো চাষ হওয়া সবজি, এর জন্ম আফ্রিকায়। লাউ একটি ধ্বনি পরিবর্তিত শব্দ, যার মূল শব্দ 'অলাবু'। লাউকে কোন কোন স্থানে আঞ্চলিক ভাষায় কদু বলা হয়। কচি লাউয়ের রং হালকা সবুজ, ভেতরে সাদা রঙের শাঁস। এটি সবজি হিসেবে খাওয়া হয়। শুধু লাউ নয়, লাউয়ের বাকল, লতা, এমনকি পাতাও খাওয়া যায়।
তথ্য সূত্রঃ উইকিপিডিয়া



পুষ্টিগুন

লাউয়ে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন-সি বেশি থাকে। প্রতি ১০০ গ্রাম খাদ্যপযোগী লাউ এ ক্যালসিয়াম ২৬ মিলিগ্রাম ও ভিটামিন সি ৪ মিলিগ্রাম রয়েছে। এছাড়াও লাউয়ের অন্যান্য পুষ্টিগুন ও রয়েছে যেমন, খনিজ পদার্থ ০.৬ গ্রাম, আঁশ ০.৬ গ্রাম, খাদ্যশক্তি ৬৬ কিলোক্যালরি, আমিষ ১.১ গ্রাম, লৌহ ০.৭ মিলিগ্রাম, শর্করা ১৫.১ গ্রাম।

লাউ চাষ পদ্ধতিঃ

উন্নত জাতঃ
বারি লাউ -১, বারি লাউ -২, বারি লাউ -৩ , বারি লাউ -৪। লাউ সারা বছর চাষ করা যায় ।

পুষ্টিগুনঃ
লাউয়ে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন-সি বেশি থাকে। প্রতি ১০০ গ্রাম খাদ্যপযোগী লাউ এ ক্যালসিয়াম ২৬ মিলিগ্রাম ও ভিটামিন সি ৪ মিলিগ্রাম রয়েছে। এছাড়াও লাউয়ের অন্যান্য পুষ্টিগুন ও রয়েছে যেমন, খনিজ পদার্থ ০.৬ গ্রাম, আঁশ ০.৬ গ্রাম, খাদ্যশক্তি ৬৬ কিলোক্যালরি, আমিষ ১.১ গ্রাম, লৌহ ০.৭ মিলিগ্রাম, শর্করা ১৫.১ গ্রাম।

বপনের সময়ঃ
মধ্য শ্রাবণ-মধ্য কার্তিক (আগস্ট অক্টোবর) মধ্য ফাল্গুন মধ্য জ্যৈষ্ঠ (ফেব্রুয়ারি - মে)।

চাষপদ্ধতি:
পলিথিন ব্যাগে চারা তৈরি করলে রোপণের পর চারা দ্রুত বৃদ্ধি পায়। ৫ X৪ ইঞ্চি আকারের ব্যাগে সমান পরিমাণ বালি, মাটি ও পচা গোবরের মিশ্রণ ভর্তি করে ব্যাগের তলায় ২-৩ টি ছিদ্র করুন। তারপর সদ্য তোলা বীজ হলে রৌদ্রোজ্জ্বল, সহজে আলো-বাতাস চলাচল করতে পারে এরকম উর্বর জমি বীজতলার জন্য বেছে নিতে হবে। প্রতি মাদায় ৩-৪ টি বীজ ১-২ ইঞ্চি গভীরে পুঁতে ঢেকে দিন।

বীজের পরিমানঃ
জাত ভেদে শতক প্রতি ৪-৫ গ্রাম ।

সার ব্যবস্থাপনাঃ

সারের নাম সারের পরিমাণ (প্রতি শতক এর জন্য)
গোবর বা কম্পোস্ট ৪০ কেজি
ইউরিয়া ২ কেজি
টি এস পি ১.৬ কেজি
এমপি ১.২ কেজি
বোরণ ১০ গ্রাম

পিট তৈরি করার সময় সমুদয় গোবর, টিএসপি, বোরণ, অর্ধেক পটাশ এবং পাঁচ ভাগের এক ভাগ ইউরিয়া সার মাটির সাথে ভালভাবে মিশিয়ে দিতে হবে। সার মেশানের ১০-১৫ দিন পর জমিতে বীজ বপন করতে হয়। অবশিষ্ট ইউরিয়া ও পটাশ সার সমান চার কিস্তিতে পুরো জীবনকালে উপরি প্রয়োগ করতে হয়।

সেচঃ
লাউ ফসল পানির প্রতি খুবই সংবেদনশীল। প্রয়োজনীয় পানির অভাব হলে ফল ধারন ব্যাহত হবে এবং যেসব ফল ধরেছে সেগুলো আস্তে আস্তে ঝড়ে যাবে। লাউয়ের সমস্ত জমি ভিজিয়ে প্লাবন সেচ দেওয়া যাবে না। শুধুমাত্র সেচ নালায় পানি দিয়ে আটকে রাখলে গাছ পানি টেনে নিবে। প্রয়োজনে সেচ নালা হতে ছোট কোন পাত্র দিয়ে কিছু পানি গাছের গোড়ায় সেচ দেওয়া যায়। শুষ্ক মৌসুমে লাউ ফসলে ৫-৭ দিন অন্তর সেচ দেয়ার প্রয়োজন পড়ে।

আগাছাঃ
সেচ ও সার দেবার পর জো আসা মাত্র আগাছা দমন করুন। চারা গজানোর ২০-২৫ দিন পর আগাছা দমন করতে হবে। গাছ খুব ঘন থাকলে পাতলা করে দিতে হবে। প্রতি বর্গমিটারে রবি মৌসুমে ৫০-৬০ টি এবং খরিফ মৌসুমে ৪০-৫০ টি চারা রাখা উত্তম।

আবহাওয়া ও দুর্যোগঃ
অতিরিক্ত বৃষ্টির পানি বের করে দিতে হবে। ঝড় বৃষ্টি থেকে রক্ষার জন্য খুঁটির সাথে বেধে দিন ।

পোকামাকড়ঃ
• ফলের মাছি পোকা দমনে সাইপারমেথ্রিন জাতীয় কীটনাশক (যেমন ওস্তাদ ২০ মিলিলিটার অথবা ম্যাজিক অথবা কট ১০ মিলিলিটার) প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে স্প্রে করতে হবে ১০-১২ দিন পরপর ২/৩ বার। ঔষধ স্প্রে করায় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
• রেড পামকিন বিটল/ লাল বিটল পোকা দমনে সাইপারমেথ্রিন জাতীয় কীটনাশক (যেমন ওস্তাদ ২০ মিলিলিটার অথবা ম্যাজিক অথবা কট ১০ মিলিলিটার) প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে স্প্রে করতে হবে ১০-১২ দিন পরপর ২/৩ বার। ঔষধ স্প্রে করায় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
• জাব পোকা দমনে ইমিডাক্লোরোপ্রিড জাতীয় কীটনাশক (যেমন এডমায়ার অথবা টিডো ৭-১০ মিলিলিটার / ২মুখ) ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে স্প্রে করতে হবে ১০ দিন পরপর ২/৩ বার। ঔষধ স্প্রে করায় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
• সুড়ঙ্গকারী পোকা দমনে সাইপারমেথ্রিন জাতীয় কীটনাশক (যেমন ওস্তাদ ২০ মিলিলিটার অথবা ম্যাজিক অথবা কট ১০ মিলিলিটার) প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে স্প্রে করতে হবে ১০-১২ দিন পরপর ২/৩ বার। ঔষধ স্প্রে করায় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

রোগবালাইঃ
• পাউডারি মিলডিউ রোগ রোগ দমনে সালফার জাতীয় ছত্রাক নাশক (যেমন কুমুলাস ৪০ গ্রাম বা গেইভেট বা মনোভিট ২০ গ্রাম) অথবা কার্বেন্ডাজিম জাতীয় ছত্রাকনাশক (যেমন: গোল্ডাজিম ৫ মিলিটার বা এমকোজিম বা কিউবি বা কমপ্যানিয়ন ২০ গ্রাম) প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে ১০ দিন পরপর আক্রমণের শুরু থেকে মোট ২-৩ বার প্রয়োগ করুন। ঔষধ স্প্রে করায় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
• এনথ্রাকনোজ/ফল পচা রোগ রোগ দমনের জন্য কার্বেন্ডাজিম জাতীয় ছত্রাকনাশক (যেমন-এইমকোজিম ২০ গ্রাম) প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে ১২-১৫ দিন পর পর ২-৩ বার ভালভাবে স্প্রে করতে হবে অথবা প্রোপিকোনাজল জাতীয় ছত্রাকনাশক (যেমন টিল্ট ৫ মিলি/ ১ মুখ) ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে ১০-১২ দিন পর পর ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে ।
• ডাঊনি মিলডিউ রোগ দমনের জন্য ম্যানকোজেব জাতীয় ছত্রাকনাশক ( যেমনঃ রিডোমিল গোল্ড ১০ লিটার পানিতে ২০ গ্রাম মিশিয়ে ১০-১২ দিন পর পর ২-৩ বার স্প্রে করতে যেতে পারে। স্প্রে করার পর ১৫ দিনের মধ্যে সবজি বিষাক্ত থাকবে। ঔষধ স্প্রে করায় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
• পাতায় হলদে মোজাইক রোগের বাহক পোকা (জাবপোকা) দমনে ইমিডাক্লোরোপ্রিড জাতীয় কীটনাশক (যেমন এডমায়ার অথবা টিডো ৭-১০ মিলিলিটার / ২মুখ) ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে স্প্রে করতে হবে ১০ দিন পরপর ২/৩ বার।
সতর্কতাঃ
বালাইনাশক/কীটনাশক ব্যবহারের আগে বোতল বা প্যাকেটের গায়ের লেবেল ভালো করে পড়ুন এবং নির্দেশাবলি মেনে চলুন । ব্যবহারের সময় নিরাপত্তা পোষাক পরিধান করুন। ব্যবহারের সময় ধূমপান এবং পানাহার করা যাবে না। বালাইনাশক ছিটানো জমির পানি যাতে মুক্ত জলাশয়ে না মেশে তা লক্ষ্য রাখুন। বালাইনাশক প্রয়োগ করা জমির ফসল কমপক্ষে সাত থেকে ১৫ দিন পর বাজারজাত করুন। বালাইনাশক/কীটনাশক ব্যাবহারের সময় নিরাপত্তা পোষাক পরিধান করুন। ব্যবহারের সময় ধূমপান এবং পানাহার করা যাবে না।

ফলনঃ
জাত ভেদে শতক প্রতি ফলন ১৪০- ১৫০ কেজি।

সংরক্ষনঃ
ঠান্ডা ও বাতাস চলাচল করা জায়গাতে ফল ঘষা বা চাপ খায় না এমন ভাবে সংরক্ষন করুন। চটের ছালা মাটিতে বিছিয়ে ২ থেকে ৩ দিন রাখা যাবে।

তথ্য সূত্রঃ বামিস

You may also like

1 of 5